ঢাকা, ৩০ জুলাই (মাতৃভূমির খবর ডিজিটাল ডেস্ক): কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে উদ্ভূত পরিস্থিতি সামাল দিতে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এবং ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) প্রধান হারুন অর রশীদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪-দলীয় জোটের বৈঠকে। গতকাল বিকেলে গণভবনে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ জোটের অন্যান্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে কোটা সংস্কার আন্দোলনের সাত সমন্বয়ককে ডিবি কার্যালয়ে রেখে আন্দোলন প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়ে ভিডিওচিত্র ধারণের বিষয়টি নিয়েও আলোচনা হয়। এ বিষয়ে ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেন, “হারুনের (ঢাকা মহানগর পুলিশের ডিবিপ্রধান) কর্মকাণ্ডে প্রমাণ হলো, আমলা দিয়ে রাজনৈতিক সমস্যার সমাধান হয় না। রাজনৈতিক সমস্যার সমাধান রাজনীতিবিদদের দিয়েই করতে হয়।”
ডিবি হেফাজতে নিয়ে সমন্বয়কদের সঙ্গে পুলিশ কর্মকর্তা হারুনের ব্যবহার (এক টেবিলে বসে খাবার খাওয়ার ছবি) নিয়ে হাইকোর্টের মন্তব্য সরকারের বিপক্ষে গেছে বলেও বৈঠকে একাধিক নেতা অভিমত প্রকাশ করেন। এ বিষয়ে জোটের একটি দলের নেতা বলেন, “সমন্বয়কদের ধরলওবা কেন? আবার ধরে ওদের খাইয়ে মিডিয়ার প্রচার জাতির সঙ্গে মশকরা।” জবাবে বৈঠকে আওয়ামী লীগের এক নেতা বলেন, “হারুন সবসময় উল্টাপাল্টা কাজ করে। ওকে দ্রুতই বদলি করার জন্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে নির্দেশনা দেওয়া দরকার।” এ সময় ডিবির এ ধরনের কর্মকাণ্ডের বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে রাতেই কথা বলবেন বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।
কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে উদ্ভূত পরিস্থিতি সামাল দিতে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন ওঠে। বৈঠকে একাধিক নেতা বলেন, কোটা আন্দোলন ঘিরে ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্য-বিবৃতি পরিস্থিতিকে আরও ঘোলাটে করেছে।
জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু বলেন, “দলের (আওয়ামী লীগ) ব্যর্থতা, প্রশাসনিক ভুলত্রুটির কারণে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠেছে। এগুলো চিহ্নিত করে সমাধান করতে হবে।” তিনি আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেন, “তার বক্তব্য-বিবৃতি পরিস্থিতি আরও ঘোলাটে করে তোলে।” এ সময় রাশেদ খান মেননও ওবায়দুল কাদেরের ভূমিকা ও পুলিশি হস্তক্ষেপ নিয়ে সমালোচনা করেন। তিনি উল্লেখ করেন, পরিস্থিতি সামলাতে প্রয়োজন হলে ১৪ দলের নেতাদের সামনে আনা যেত। গতকাল বিকেল ৫টায় শুরু হওয়া রুদ্ধদ্বার এ বৈঠক রাত ৯টা পর্যন্ত চলে। বৈঠক শেষে গণভবনের ফটকে দাঁড়িয়ে বৈঠকের সিদ্ধান্তের বিষয়ে সাংবাদিকদের অবগত করেন ওবায়দুল কাদের।